শনিবার, ২৬ মে, ২০১২

উইন্ডোজের ২০ বছর


উইন্ডোজের ২০ বছর
রেটিং :

0%
গড় রেটিং:

আমিনুর রহমান

সত্তরের দশকে কম্পিউটার আবিষ্কারের পর থেকে নতুন কিছু করার তাড়নায় বিভোর ছিলেন দুই বন্ধু পল বিল গেটস এবং পল অ্যালেন। তাদের বন্ধুত্বের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে মাইক্রোসফট। শুরুতেই আরেক প্রযুক্তি জায়ান্ট আইবিএমের নজর কাড়ে প্রতিষ্ঠানটি। আইবিএম বানানো কম্পিউটারের জন্য চেজ নামের প্রোগ্রাম বানানোর দায়িত্ব পায় মাইক্রোসফট। চেজ বানাতে গিয়ে প্রথমবারের মতো উইন্ডোজের চিন্তা মাথায় আসে। বর্তমানে বিশ্বে ৯৫ শতাংশ কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও ট্যাবলেট পিসির অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে উইন্ডোজ। ১৯৮১ সালে এমএস-ডস উদ্ভাবনের মাধ্যমে উইন্ডোজের প্রাক আবির্ভাব ঘটে। তবে বিশ্বে কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমে অদ্বিতীয় হিসেবে একচ্ছত্র অধিপতি উইন্ডোজের পূর্ণাঙ্গ আবির্ভাব ঘটে ২০ বছর আগে। মাইক্রোসফটের হাত ধরেই সাধারণের পর্যায়ে চলে আসে কম্পিউটার। এ যাবত ১৬টি সংস্করণ ছেড়েছে মাইক্রোসফট। আর চলতি বছরের শেষভাগে ১৭ নম্বর সংস্করণ হিসেবে প্রকাশের অপেক্ষায় আছে উইন্ডোজ৮। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন এই ওএস বদলে দিতে পারে প্রচলিত ধারার কম্পিউটার চালানোর রীতি।
দিনে দিনে উইন্ডোজ : কম্পিউটার হার্ডওয়্যার এবং প্রোগ্রামের মধ্যে সমন্বয়ের জন্য উইন্ডোজ গঝউঙঝ তৈরি করে মাইক্রোসফট। ১৯৮১
সালে গঝউঙঝ চালিত পিসির বাজারে আগমন। সি প্রোগ্রামিং কোড
লিখে কম্পিউটারকে দিয়ে মোটামুটি কাজ করানো যেত। ১৯৮৫ সালে অবমুক্ত করে উইন্ডোজ ১.০। কমান্ড প্যাডের সঙ্গে মাউস পয়েন্টার জুড়ে দিয়ে রীতিমতো বিস্ময়ের জন্ম দেয়। এর দুই বছরের মাথায় ডেস্কটপ আইকন, বাড়তি মেমোরি ও গ্রাফিকস সমর্থন, স্ক্রিন লেআউট এবং কিবোর্ড শর্টকাট ফিচার নিয়ে উইন্ডোজ ২.০ অবমুক্ত হয়। আলাদা সফটওয়্যার ইনস্টল, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, ফাইল ম্যানেজার এবং প্রিন্টের সুবিধা নিয়ে ১৯৯০-এ আসে উইন্ডোজ ৩.০।
উইন্ডোজ ৩.১ : ৩২ বিটের ডাটা এক্সেস নিয়ে উইন্ডোজ ৩.১ আসে ১৯৯২ সালের এপ্রিলে। পূর্ণাঙ্গ অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে পথচলা শুরু হয় আজকের আধুনিক উইন্ডোজের। ইন্টারনেট চালানোর সক্ষমতা, উন্নত প্রযুক্তির ছোঁয়া এবং সার্ভিস প্যাক ভেলকিতে সাফল্যের চূড়ায় পেঁৗছে যায় মাইক্রোসফট। প্রকাশের পর প্রথম দুই মাসে বিক্রি হয়ে যায় ১০ লাখ কপি উইন্ডোজ। পরবর্তী সময়ে এর ওয়ার্কগ্রুপ এবং এনটি [নিউ টেকনোলজি বা নতুন প্রযুক্তি] নামের আরও দুটি সংস্করণে আসে উইন্ডোজ ৩.১।
উইন্ডোজ ৯৫ :মাইক্রোসফট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল উইন্ডোজ হিসেবে উইন্ডোজ ৯৫-এর আগমন ১৯৯৫ সালের আগস্টে। পারফরম্যান্স বাড়াতে যুক্ত হয় স্টার্ট মেন্যু, টাস্কবার, উইন্ডোজ এক্সপ্লোরার, ফাইল ম্যানেজারের মতো বেশকিছু নতুন ফিচার। ইন্টারনেট চালানোর জন্য প্রথমবারের মতো যুক্ত হয় ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার। পরবর্তী দুই বছরে এর সঙ্গে মাইক্রোসফট নেটওয়ার্ক [এমএসএন], এফএটি৩২, এমএমএক্স এবং সার্ভিস প্যাক যুক্ত হয়। অনেক কাজ একত্রে করানোয় ব্যবহারকারীদের মধ্যে বেশ উৎসাহ জাগিয়ে মাত্র চার দিনে বিক্রির অংকে ১০ লাখ ছাড়িয়ে যায় এটি।
উইন্ডোজ ৯৮ :আধুনিক গ্রাফিকস-শৈলী নিয়ে উইন্ডোজ ৯৮ আসে ১৯৯৮-এর জুনে। যুক্ত হয় ডিস্ক ডিফ্রাগমেন্টার, উইন্ডোজ কনফিগার ইউটিলিটি, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ৫ এবং সিডি ড্রাইভ, ইউএসবি সমর্থনসহ বেশকিছু নতুন ফিচার।
উইন্ডোজ২০০০ : বিংশ শতাব্দীর শুরুতে বিশ্ববাসীকে চমক দিতে ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারিতে উইন্ডোজ২০০০ প্রকাশিত হয়। প্রফেশনাল, সার্ভার, অ্যাডভান্স সার্ভার এবং ডাটাসেন্টার সার্ভার_ এ চারটি সংস্করণ একত্রে বের হয়। তবে নতুনত্ব না থাকায় ব্যবহারকারীদের মন গলাতে পারেনি মাইক্রোসফট। এ জন্য ওই বছরের শেষভাগে বের করে উইন্ডোজের মিলেনিয়াম [এমই] সংস্করণ। তবে এমই সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়।
উইন্ডোজ এক্সপি :বাজার হারানোর আশঙ্কায় থাকা মাইক্রোসফট এর ঠিক এক বছরের মাথায় নিয়ে আসে উইন্ডোজ এক্সপি। অনন্য গ্রাফিকস, গতিময়তা, এলসিডি মনিটর সমর্থনযোগ্যতা, সাইডবার, কন্ট্রোল প্যানেল, ওয়াইফাই, উইন্ডোজ সিকিউরিটি সেন্টার ফিচার দিয়ে আবারও বাজিমাত। ঘুরে যায় মাইক্রোসফটের ভাগ্যের চাকা। বিক্রির পরিমাণ কম করে হলেও ১০০ কোটি। বর্তমান সময় পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তার করা এক্সপিকে উন্নত করার কাজ ২০১৪ পর্যন্ত চালিয়ে যাবে মাইক্রোসফট।
উইন্ডোজ ভিসতা :এক্সপির বাজার চড়া থাকা সত্ত্বেও চিরায়ত ধারা বজায় রাখার অংশ হিসেবে উইন্ডোজ ভিসতা মুক্ত হয় ২০০৭-এর জানুয়ারিতে। উইন্ডো অ্যারো, ত্রিমাত্রিক ফ্লিপ, ইন্সট্যান্ট সার্চ, ফটো গ্যালারি ফিচার নিয়ে বেশ জাঁকজমকভাবে যাত্রা শুরু করলেও উচ্চমাত্রার পিসি কনফিগারেশন এবং শ্লথগতির জন্য তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি ভিসতা।
উইন্ডোজ সেভেন :নতুনত্বের আহ্বানে উইন্ডোজ সেভেন রিলিজ পায় ২০০৯-এর অক্টোবরে। ল্যাপটপ, ট্যাবলেট পিসিতে বেশ ভালোভাবে কর্মক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারে। মাঝারি মাত্রার পিসি কনফিগারেশন এবং তুলনামূলক দ্রুতগতির হওয়ায় বর্তমানে এক্সপির পরপরই সেভেনের অবস্থান। রিলিজের প্রথম সপ্তাহে বিক্রি হয় ১ কোটি কপি।

                                                                                                                                             বিশ্ব

যদি কেউ যায় হারিয়ে চিরতরে

যদি কেউ যায় হারিয়ে চিরতরে
রেটিং :

0%
গড় রেটিং:

জীবন খুব রহস্যময় এক জিনিস! টিনএজে জীবন অনেক বেশি গতিশীল ও রঙিন হয়ে ধরা দেয়। হয়ে ওঠে অনেক বেশি স্বপ্নময়। কিন্তু এমন মুহূর্তও আসে, আসতে পারে_ যেটির জন্য ভুলেও অপেক্ষা করে না কেউ; নেয় না কোনো প্রস্তুতি! তবু আসে, আসতে পারে কালক্ষণ! হারিয়ে যেতে পারে খুব কাছের কেউ। হয়তো বন্ধু, হয়তো আত্মীয়। আর এ হারিয়ে যাওয়া মানে হারিয়ে যাওয়াই, একেবারে চিরতরে। তাকে ফিরে পাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা থাকে না। অনাকাঙ্ক্ষিত, তবু এমন কঠিন মুহূর্ত যদি এসে দাঁড়ায় সামনে, তখন কী করে তোমরা সামলে নেবে নিজেকে? তার কিছু বুদ্ধি নিয়ে সাজানো হলো আজকের এ আয়োজন। লিখেছেন তারজিনা ইসলাম এ্যানী

খুব কাছের কেউ মারা গেলে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের পক্ষেও তা মেনে নেওয়া কষ্টকর। আর তোমরা যারা টিনএজার, তাদের কাছে তো এ বেদনা হিমালয়ের চেয়ে বড় হয়ে ধরা দেয়। আর তা এতটাই কাবু করে ফেলতে পারে যে, জীবনের মানেটাই একেবারে নতুন হয়ে উঠতে পারে তোমার কাছে।
এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বা দুর্ঘটনা থেকে তোমাদের ভেতরে জন্ম নেওয়া বিষাদাত্মক অনুভূতি তোমার সাবলীল চিন্তা-চেতনাকে একেবারে ডুবিয়ে দেওয়ার অপক্ষমতা রাখে। তুমি হয়ে যেতে পার আত্মহারা। কিন্তু তবুও তো জীবন বয়ে চলে জীবনের নিয়মে। ফলে, এ রকম অপূরণীয় ক্ষতির ভেতরও বেঁচে থাকার মন্ত্রণা শিখে নিতে হবে তোমাকে। হতে হবে শক্ত। ভাবতে হবে পূর্ণবয়স্ক মানুষের মতো।
কিন্তু কীভাবে তা সম্ভব? চলো একটু ভেবে দেখি সেটা।
থাকো সৎ নিজের ও অন্যদের সঙ্গে
যখন তোমার আপন কেউ মারা যাবে, তখন তোমার উচিত হবে যতটা সম্ভব নিজের এবং অন্যদের সঙ্গে সৎ থাকা। তুমি এমন সাহসী একটা ভাব করবে, মর্মাহত হলেও ভেঙে পড়োনি তুমি; এ ক্ষতি সামলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা তুমি রাখো। খেয়াল রেখো, তোমার অনুভূতি যতটাই বেদনার হোক না কেন, সেটি যেন তোমাকে পুরোপুরি পর্যুদস্ত করতে না পারে।
চলো, দেখে নেওয়া যাক, কেমন হতে পারে অনুভূতি তোমার_
ূ বিষণ্নতা।
মর্মপীড়া।
ূ একাকিত্ব।
ূ অপরাধবোধ।
ূ রাগ।
ূ ক্ষোভ।
ূ অনিশ্চয়তাবোধ।
ূ উপশম।
ূ হতাশা।
ূ মানসিক চাপ।
ূ অসাড়তা।
এবং
এমন এক পক্ষাঘাতগ্রস্ততা_ যেন কোনো সিদ্ধান্তেই পেঁৗছুতে পারছ না তুমি।
ব্যক্ত করো অনুভূতি
তুমি যখন তোমার অনুভূতিগুলো শনাক্ত করতে পারবে, তখন সেটি চেপে না রেখে প্রকাশ করো অন্যদের সঙ্গে। এমন বিষাদাত্মক অনুভূতিগুলোকে নিজের মধ্যে আটকে রাখলে সেটা তোমার হতাশাকে আরও বাড়িয়ে দেবে। আর তার বিস্ফোরণ হতে পারে ভয়াবহ।
কথা বলো বন্ধু কিংবা আত্মীয়ের সঙ্গে
জানি, একদমই ইচ্ছে করবে না, তবু এ ক্ষেত্রে তুমি প্রাপ্তবয়স্ক কারও সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে পার। হতে পারেন তিনি তোমার শিক্ষক, কিংবা আত্মীয় কিংবা এমন কেউ, যে কিনা তোমাকে বুঝতে পারবেন। তাও যদি না হয়, তাহলে যা যা করতে পার তুমি_
ূ লিখতে পার জার্নাল।
ূ লিখে ফেলতে পার গান কিংবা কবিতা।
ূ ব্লগে করতে পার লেখালেখি।
ূ সাহায্য চাইতে পার অনলাইনে।
ূ যোগ দিতে পার স্থানীয় কোনো সাপোর্টিং গ্রুপে।
করো বাইরে যাওয়া-আসা
নিজের এমন মর্মযাতনাদায়ক অনুভূতিগুলোকে একটু রেহাই দেওয়ার জন্য বাইরে বের হতে পার। দৃশ্যের বদল তোমাকে ভালো অনুভূতি দিতে পারে। কখনও কখনও একটা নতুন সেটআপ পারে লাঘব করতে তোমার দুঃখ।
কিন্তু যাবে কোথায়? বলি_
ূ আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করে আসো।
ূ ব্যায়াম করে নিজেকে ক্লান্ত করার চেষ্টা করো।
ূ কোনো বই বা সিনেমাতে নিজেকে হারিয়ে ফেলার চেষ্টা কর।
ূ যেতে পার কাছের কোনো মাঠে খেলা দেখতে।
কাছের কারও মৃত্যুশোক নিয়ে বেঁচে থাকতে অনেকটা সময় লাগবে সহজ হওয়ার জন্য, এটাই স্বাভাবিক। কোনো বন্ধু বা পরিবারের সদস্যের মৃত্যুশোক নিয়ে বেঁচে থাকাটা কোনো প্রতিযোগিতা নয়; আবার এমন কিছুও নয়. যেটা তুমি ভেবে রাখবে আগে থেকে।
প্রত্যেক মানুষেরই নিজস্ব ধারণা থাকে মৃত্যুশোক সামলে বেঁচে থাকার। ফলে, যে জিনিসটি তোমাকে সাহসী করে তোলে, যে জিনিসটি তোমার শোককে দমিয়ে দিতে তোমার ভেতরে জীবনের জয়গানকে জাগ্রত করে, সেটিকে অবলম্বন করেই চেষ্টা কর তুমি। জেনে রেখো, তোমার বন্ধু বা পরিবারের সদস্যরা সম্ভবত তোমার ইশারার জন্য অপেক্ষা করছে। তাই যদি তাদেরকে একটুও দ্বিধান্বিত মনে হয়, তাহলে হতাশ হয়ো না। ভেবে নিও, তারা ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না_ কী করে তোমাকে সাহায্য করবে।
বলি, বন্ধু, একটু ধৈর্য ধর। হতাশ হয়ো না। দেখবে, তোমার জীবন নতুন আঙ্গিকে শুরু হয়েছে। তার মানে এই নয় যে, তুমি তাদেরকে ভুলে যাবে। বরং, পরে দেখা যাবে, তুমি তোমার জীবনে সুখী হয়েছো। আর তারা ঠিক এই জিনিসটিই চেয়েছিল।